কল্পনা মিত্র : অনন্ত বহুদিন পর রথের সময় তার জন্মস্থান কলকাতায় ফিরেছে। পাঁচ বছরের ছেলে অর্ককে রথযাত্রার অনেক গল্প শুনিয়েছে। স্ত্রী মনীষা বলেছে সামনের বছর ওরাও ছোট একটা রথ সুন্দর করে সাজাবে। অনন্তর মনে ভারি ইচ্ছে ওদের রথের মেলায় নিয়ে যায় আর সেই ডুগভুগিওয়ালা গাড়ি আর ছোট্ট বেহালা কিনে দেয়। অনন্তর মনে তার ছেলেবেলার সুখময় স্মৃতিগুলো উঁকি মেরে যায়। স্ত্রী আর পুত্র নিয়ে সেই মেলা বসা মাঠটাকে
কিছুতেই খুঁজে পেলো না সে।সেখানে দেখলো উঁচু উঁচু বাড়ি নিয়ে একটা হাউসিং কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে । মনমরা হয়ে ফেরার সময় বৃষ্টি নামলো।
এক বয়স্ক ফেরিওয়ালা মাথায় ঝুড়ি নিয়ে বাস স্টপেজের শেডের তলায় দাঁড়িয়েছিল তার হাতে ছোট্ট বেহালা দেখে অনন্ত স্ত্রী-পুত্র নিয়ে বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচানোর অছিলায় পৌঁছে গেলো। ছোট্ট অর্কের চোখে জল ছল ছল করছিল। সকাল থেকে শোনা রথের আর রথের মেলার গল্প শুনে তারও মনে সাধ হয়েছিল বাবার ছেলেবেলার আনন্দটা একটু উপভোগ করার কিন্তু কিচ্ছু হলোনা।অনন্ত ততক্ষণে বেহালা আর ডগডুগি গাড়ি কিনে ফেলেছে।অর্ককে মায়ের কোল থেকে নামিয়ে তার হাতে গাড়ির দড়ি ধরিয়ে দিল। বৃদ্ধ তার হাতের বেহালাতে সুর তুললো।অর্কের উজ্জ্বল চোখে আর জলের কণামাত্রও দেখা যাচ্ছেনা। শেডের বাইরে বৃষ্টি ঝড়াও ততক্ষণে বন্ধ হয়েছে।
Well written, keep it up.