কল্পনা মিত্র : এক-দুই-তিন-চার সংখ্যা গুনতে গুনতে পথ চলছিল পিয়ালী। মন যখন ভাবনাশূণ্য থাকে এরকমটাই করে সে,যেমন বাস,ট্রাম,ট্রেন,গাড়ী যাতেই চেপে পথে বের হোক না কেন কয় তলা বাড়ি,কটা গাছ,কটা পাখি,কটা গরু কিংবা ছাগল এমনকি বাঁদর পর্যন্ত গুণতে থাকে। তখন সে বোঝে আজ সে চিন্তা মুক্ত আছে। এসব লক্ষণের কথা কাউকে বলা যায় না এটা নিজেকে নিজেই চিনে নেওয়ার উপায়। মাঝেমাঝেই আত্মসমালোচনায় মশগুল হয়ে পরে পিয়ালী। এখন নতুন রোগ হয়েছে ,যা দেখে তাতেই ছড়া বাধে। কখনওবা মোবাইলের নোট প্যাডে লিখে রাখে। সেই ছেলেবেলায় পড়া
” ছিপখান তিন-দাঁড় –
তিনজন মাল্লা
চৌপর দিন-ভোর
দ্যায় দূর-পাল্লা
দূর-পাল্লা….”র মতন চলন্ত ট্রেনে সে লেখে “রেলগাড়ি ঝুকঝুক/ভয়ে বুক ধুকপুক/ বোগি হেলে দোলেরে/ ভয়ে আমি মরিরে।” বৃষ্টিতে গাড়িতে বসে লেখে “ঝমঝম বরষায়/জানালার কাঁচে জল চমকায়/কিবা রূপ আহারে!/আমি ভাবি হীরা এ।” আবার কিছুদিনে ভাবনার বদল হলো যা কিছু দেখে তাতেই আতঙ্ক আর সেই আতঙ্কময় বিপদ থেকে বেড়িয়ে আসার উপায় খোঁজা – যেমন – ফাঁকা রাস্তা, পেছনে যে লোকটা আসছে সে যদি হঠাৎ আক্রমণ করে তাহলে কিভাবে ব্যাক্ কিক্ দিয়ে আক্রমণ ঠেকাবে। ভীড় বাসে বা রাস্তায় কোন অপ্রকিতিস্হ মানুষের কুনুই বা হাতের অপ্রত্যাশিত স্পর্শ থেকে আত্মরক্ষা করতে কি ভাবে আলপিন বা সরু সূঁচ বা কাঁটার ব্যবহার করবে ইত্যাদি।
আশ্চর্যজনকভাবে বিয়ের পর পিয়ালী এ ধরণের ভাবনা থেকে মুক্তি পেলো। কিন্তু কেন এই ভাবনাগুলো আসতো কিম্বা আজ কেন আসেনা বা ভাবনাগুলো কখনও যে আসতো সেকথা বেমালুম ভুলেই গেল। আজ ষাটের কোঠায় আবার সেই রকম নির্ভাবনার ভাবনাগুলোর উদয় হতে দেখে সে না হেসে পারলো না…। আত্মসমালোচনায় মগ্ন পিয়ালী বুঝলো মানুষ কখনও একা বাঁচতে পারে না। মানুষের রোমাঞ্চ পিয়াসী মন নিত্য নতুন কিছু না কিছু নিয়ে মেতে থাকতে চায়। আসলে যার যেমন অভ্যাস। একঘেয়েমি থেকে বেড়িয়ে আসার উপায় যার কাছে যেমন থাকে সে তাই নিয়ে মেতে ওঠে।ভ্রমণবিলাসী মানুষ ভ্রমণেই তৃপ্তি পায়। গবেষক পায় গবেষণায়। লেখক পায় লেখায়। কূটনৈতিকগণের তৃপ্তি কূটনীতিতে। আবার পরচর্চা বা পরনিন্দাকে যাঁরা ভালোবাসেন তাঁরা মানুষের মধ্যে চর্চার বা নিন্দার বিষয় খোঁজেন। ভালোমানুষেরা মানুষের ভালো দিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। ষাটের কোঠার পিয়ালী স্বামী -সংসারে এখন অনেকটাই অভ্যস্ত সুতরাং এবার সে কবিতা,গল্প,উপন্যাস পড়াতে আর সেই সব বিষয়বস্তুর বা চরিত্রের ভাবনায় মেতে রইল। আর নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করলো আর কতকাল বাঁচবো…আর কতকাল নির্ভাবনার ভাবনাগুলোকে নিয়ে নিজের মনের প্রশ্নের উত্তর দেবো? ভাগ্যি মন কেউ দেখতে পায় না তাই মন তার ইচ্ছের ডানা মেলে স্বাধীন ভাবে নিজের মর্জি মতন উড়ে বেড়ায় !! এই ওড়াতেও সুখ আর তৃপ্তি আছে।
Achcha Ma’am ekhane j story gulo post Kora hochche ,Jara likhechen , ba likhben first e kothay submitted korte hbe ,story gulo? Bcz amio likhi kichu story… ND kothay submit korte pari?
EMAIL KORUN
9800766641 WP