বেকারত্ব : প্রজ্ঞা,
আদৃতা আর কৃষানুর সম্পর্কটা প্রায় ৬ বছর গড়িয়েছে, কলেজের প্রেম। ভীষন ভালোবাসে ওরা দুজন দুজনকে। কিন্তু এবার বয়স বাড়ছে,বাড়ি থেকে বিয়ের জন্যে চাপ আসছে আদৃতার।এতদিন তাদের সম্পর্কের কথা শুধু আদৃতার বোন জানত,বাবা মা জানত না।এবার সে সাহস করে সবটা বাড়িতে বলে দেয়। তখনও কৃষানু জীবনের তেমন কোনো সাফল্য আনতে পারে নি।তাই আদৃতা বাবা মা কেউ তাদের সম্পর্কটা মানল না।তাঁরা বলে দিল”সে যে পয়সা রোজগার করে তাতে তাঁদের মেয়েকে ভালো রাখতে পারবে না”কৃষানু বলে”সে তার সবটুকু দিয়ে আদৃতাকে ভালো রাখার চেষ্টা করবে”তবুও তাঁরা কথাটি গুরুত্ব দেয়নি। তার পরের দিন তারা দেখা করে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ভীষন কাঁদে,আর কৃষানু আদৃতাকে অনুরোধ করে বাবা মায়ের পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে করতে। আদৃতা জানিয়ে দেয়,কৃষানু ছাড়া সে কাউকে বিয়ে করবে না।এই নিয়ে বাড়িতে অশান্তি চলতেই থাকে।তারা ঠিক করেছিল, বাবা মায়ের অমতে কোনোদিন বিয়ে করবে না।একদিকে প্রতিশ্রুতি আরেকদিকে ভালোবাসা দুটোকে সামলাতে না পেরে কৃষানু আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।যাওয়ার আগে চিরকুটে লিখে রেখে যায়”আদৃতা তোমার জন্য আমি কিছুই করতে পারি নি,তবে তোমায় এই ভীষন বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি দিয়ে গেলাম,আর প্লিজ বিয়ে করে নাও বাবা মায়ের পছন্দের ছেলের সাথে, খুব ভালো থেকো,এটা আমার দিব্বি রইল”।আদৃতা কান্নায় ভেঙে পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু তার মধ্যেও সে ঠিক করে নিয়েছিল”আর কোনোদিন সে বিয়ে করবে না,কৃষানুর ফেলে যাওয়া বড়ো কাজটা তাকেই করতে হবে”সে কৃষানুর বৃদ্ধ বাবা মায়ের দায়িত্ব নিয়েছে…সে এতে অনেকটা সুখী।একেই হয়তো সঠিক জীবন সঙ্গী বলে…কৃষানুর চিরকুটে লিখে যাওয়া কথার মধ্যে শুধুই অভিমান ছিল,সেটা আদৃতা খুব ভালো করেই বুঝেছিল।অপূর্ণ থেকে গেল বন্ধটা, অপেক্ষায় থেকে গেল একজন স্বর্গে আরেকজন এই মর্তে।